Thursday, April 22, 2021

কানের গঠন ও কাজ


চিত্র : কান বা কর্ণ

গঠন:

কান বা কর্ণকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। 

মানুষের কানের প্রধান তিনটি অংশ হল-

(১) বহি:কর্ণ বা কান

(২) মধ্যকর্ণ এবং

(৩) অন্ত:কর্ণ

বহি:কর্ণ:

কর্ণছত্র , কর্ণকুহর ও কর্ণপটহ দ্বারা গঠিত। এদের কাজ হল শব্দতরঙ্গকে বাইরের থেকে মধ্যকর্ণে প্রবাহিত করা।

মধ্যকর্ণ:

Blausen 0330 EarAnatomy MiddleEar.png

মেলিয়াস, ইনকাস ও স্টেপিস নামে তিনটি অস্থি দ্বারা গঠিত।এদের কাজ হল শব্দতরঙ্গকে কর্ণপটহ থেকে অন্তকর্ণে প্রবাহিত করা। স্টেপিস মানবদেহের সর্বাপেক্ষা ছোট অস্থি। স্টেপিস ত্রিকোণাকার অস্থি।

অন্তঃকর্ণঃ

করোটির অডিটরি ক্যাপ্সুলের পেরিওটিক অস্থির অভ্যন্তরে অন্তঃকর্ণ অবস্থান করে। অন্তঃকর্ণের প্রধান অংশ হলো পাতলা পর্দা জাতীয় মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ নামক একটি জটিল  অঙ্গ। এ অঙ্গটি এন্ডোলিম্ফ নামক তরল পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে।  পেরিলিম্ফ নামক তরল পদার্থপূর্ন অস্থিময় ল্যাবিরিন্থ দ্বারা মেমব্রেনাস লেবিরিন্থ পরিবেষ্টিত থাকে। এন্ডোলিম্ফ ও পেরিলিম্ফ সম্পূর্নভাবে পৃথক থাকে।

মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ এর মূলদেহ ইউট্রিকুলাস ও স্যাকুলাস নামক দুটি প্রকোষ্ঠ নিয়ে গঠিত। ইউট্রিকুলাস আকারে বড় ও উপরে অবস্থান করে। স্যাকুলাস ছোট এবং নিচে অবস্থান করে। স্যাকুলোইউট্রিকুলার নামক একটি সংক্ষিপ্ত নালী  দ্বারা দুটি প্রকোষ্ঠ পরস্পর সংযুক্ত থাকে ।  প্রতিটি প্রকোষ্ঠের অভ্যন্তরে ম্যাকুলা নামের কতগুলো সংবেদি কোষ থাকে এবং এগুলো থেকে সংবেদী লোম বের হয়। লোমগুলো কানের পাথর বা অটোলিথ সমন্বিত জেলিতে ডুবে থাকে। এসব সংবেদি কোষ ও লোম মানুষের মাথার অবস্থান ঠিক রাখে।  

ইউট্রিকুলাস বা ভেস্টিবিউলার অ্যাপারেটাস কানের ভারসাম্য রক্ষাকারী অঙ্গ। এটি একটি ভেস্টিবিউল বা গোলাকার প্রকোষ্ঠ এবং তিনটি অর্ধবৃত্তাকার নালী নিয়ে গঠিত।  নালীগুলোর মধ্যে দুটি উলম্বিক এবং একটি আনুভূমিকভাবে অবস্থান করে। নালীগুলো পরস্পর সমকোণে অবস্থান করে। প্রতিটি নালীর একপ্রান্ত কিছুটা স্ফিত হয়ে অ্যাম্পুলা গঠন করে যার  অভ্যন্তরে ক্রিস্টি নামের সংবেদি লোমবাহী কতগুলো কোষ থাকে।  সংবেদী লোমগুলো চুনময় জেলীর মত অটোলিথ দ্বারা আবৃত থাকে।

কাজঃ  এটি দেহের ভারসাম্য রক্ষায় প্রধান ভূমিকা রাখে।

Blausen 0329 EarAnatomy InternalEar.png

ককলিয়া ও ভেস্টিবিউলার যন্ত্র দ্বারা নির্মিত।ককলিয়ার মধ্যেই শ্রুতি-যন্ত্র অবস্থিত। Anatomy of the Human Ear.svg

কাজ:

  1. শ্রবণ কাজে সহায়তা করা।
  2. দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা।
  3. দেহের প্রতিরক্ষা করা।

Thursday, April 8, 2021

রসুনের গুনাগুণ


রসুন প্রাচীন কাল থেকেই ঔষধি গাছ হিসাবে পরিচিত। রসুন Alliaceae গোত্রের অন্তর্ভূক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কন্দ জাতীয় ফসল। ইহার বৈজ্ঞানিক নাম Allium sativum। ইহার অনেক ঔষধি গুণ আছে যাহা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। রসুন হতে ঔষধিগুণ পেতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪ কোষ কাঁচা রসুন চিবিয়ে বা ছেঁচে খেতে হবে।

চিবিয়ে পানি দিয়ে গিলে খাওয়া যায় আবার ভাত খাওয়ার সময় ভাতের সাথে মিশিয়ে চিবিয়েও খাওয়া যায়। এতে মুখে গন্ধ কম হবে ও ঝাঁঝ কম লাগবে। রসুন দিনের যে কোন সময় খাওয়া যেতে পারে। তবে খালি পেটে রসুন খাওয়া মানবদেহের জন্য ভীষণ স্বাস্থ্যকর একটি ব্যাপার। বরং খালি পেটে রসুন খেলে এমন কিছু উপকার হয়, যেটা অন্য খাবারের সঙ্গে রান্না করা অবস্থায় খেলে হয় না। খালি পেটে রসুন অবশ্যই খেতে হবে সকালে, ব্রেকফাস্ট করার আগে।

খালি পেটে রসুন খেলে রসুনের কার্যকারিতা আরও বেড়ে যায়, এটি পরিণত হয় একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকে। গবেষকদের মতে খালি পেটে রসুন খাওয়া হাইপারটেনশন ও স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে, অন্যদিকে হজমের গণ্ডগোল রোধ করে। সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়া শরীরের রক্ত পরিশুদ্ধ করে ও লিভারের ফাংশন ভালও রাখতেও সহায়তা করে। তাছাড়া দিনের যে কোন সময় রসুন খাওয়া যেতে পারে। দেশী রসুন খেলেই উপকার বেশী
পাওয়া যাবে।

প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা রসুনে নিম্নলিখিত উপাদান বিদ্যামান 

আর্দ্রতা ৬২.০০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেড ২০.৮০ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৩০ গ্রাম, আয়রণ ১.২০ মিলিগ্রাম, কপার ০.৬৩ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ ০.৮৬ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩১০.০০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০.০০ মিলিগ্রাম, জিংক ১.৯৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৭১.০০ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০৬ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লোবিন ০.২৩ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন সি ১৩.০০ মিলিগ্রাম।

প্রতিদিন নিয়মিত কমপক্ষে ৩-৪ কোষ কাঁচা রসুন খেলে অনেক উপকার পাওয়া
যায় তার কিছু নিম্নে বর্ণনা করা হল:

-হৃদরোগ এবং হৃদরোগ জনিত ষ্ট্রোক প্রতিরোধ করেঃ যে সমস্ত হৃদরোগী নিয়মিত রসুন খান, তারা অনেক বেশি অ্যাকটিভ থাকেন৷ তাদের হৃদরোগ এবং হৃদরোগ জনিত ষ্ট্রোকের ঝুকি কমে যায়।

-হৃদপিন্ডের সুস্থতায়ঃ হৃদপিন্ডের সুস্থতায় রসুন অনেক উপকার করে থাকে। রসুন কোলেস্টরল কমাতে খুবই সহায়ক। এই কারনে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম থাকে। সুতরাং হার্ট এর জন্য রসুন অনেক উপকারি। আর রক্তচাপ ও রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখতেও রসুন কাজ করে।

-রক্তনালীতে প্লাক জমতে দেয় না ও ব্লক প্রতিরোধ করেঃ রক্তনালীর ভিতর চর্বি ও ময়লা জমে নালীর গাত্র সরু হয়ে যাওয়া মারাত্বকভাবে প্রতিরোধ করে। রক্তনালীর গায়ে রক্ত কোষগুলোর আটকে যাওয়া প্রতিরোধ করে। রক্তনালীকে স্ফীত হতে সাহায্য করে। রক্তনালীর ভিতর রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। ধমনীতে ব্লক সৃষ্টি হতে দেয় না, ফলে হার্ট সহজে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে।

-রক্তের কোলেষ্টেরল কমায়ঃ প্রতিদিন রসুনের কয়েকটি কোয়া কাঁচা সেবনে কেলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে। পরীক্ষায় দেখা গেছে ৪ সপ্তাহ রসুন খাওয়ার পর কোলেষ্টেরল ১২% কমে যায়। টোটাল এবং এলডিএল কোলেস্টেরল প্রায় ১০–১৫ শতাংশ কমে যায়৷

-উচ্চ রক্তচাপ/হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করেঃ অসংখ্য মানুষ যারা উচ্চ রক্তচাপের শিকার তারা দেখেছেন, রসুন খাওয়ার ফলে তাদের উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গ উপশম হয়। রসুন খাওয়ার ফলে তারা শরীরে ভাল পরিবর্তন দেখতে পায়। দিনে চার কোয়া করে খেলে সে রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারে কিছু ক্ষেত্রে৷ রসুনে এ্যাজোইন” নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যাহা রক্ত পাতলা রাখতে সাহায্য করে, ফলে রক্ত চলাচল সহজ হয়। এভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনে।

-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ ব্লাড সুগার কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

-চোখের ও দাঁতের যত্নে রসুনঃ. চোখ ও দাঁত ভাল রাখে। রসুন চোখের ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে। আবার দাঁতের ব্যথা সারাতে রসুন সহায়তা করে থাকে। কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে দাঁতের ব্যথা ভাল হয়।

-ত্বকের যত্নে রসুনের গুনঃ রসুনের ওষধি গুণাবলী সম্পর্কে কম বেশি সবারই আমাদের জানা। হার্ট সুস্থ রাখা থেকে শুরু করে ওজন কমানো পর্যন্ত রসুনের ভূমিকা রয়েছে। ত্বকের যত্নেও রসুনের জুড়ি নেই। ব্রণ এবং ব্রণের দাগ নিমিষে দূর করে দিতে পারে এই রসুন। এক কথায় ত্বকের যত্নে রসুনের ব্যবহার অপরিসীম।

-পেটের কৃমি নিরাময়ঃ রসুন পেটের কৃমি নিরাময়ে অনেক উপকার করে থাকে। সুতরাং রসুন দেহের অভ্যন্তরীণ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং কৃমি ধ্বংস করে।

-রক্ত পরিষ্কার রাখেঃ রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। রক্ত পরিষ্কারে প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোয়া ও এক গ্লাস পরিমাণ গরম পানি সেবন করতে হবে। আর দিনে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এতে রক্ত পরিষ্কার হবে এবং ত্বক ভালো থাকবে।

-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ রোগ-প্রতিরোধে প্রতিদিন সকালে নাস্তা শেষে দুই তিন কোয়া রসুন খেতে হবে। এর ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় স্বাস্থ্যগত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। গলা ব্যথা, গলা বসে যাওয়া, হাপানী, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, কাশি, হুপিং কাশি ও ঠান্ডা লাগা ভাল করে। লিভারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফুসফুসের রোগ সারায়। কুষ্ঠ পরিষ্কারক। শরীরের এলার্জি সারায়।

-ঠান্ডা ও জ্বরের মহৌষধঃ প্রায়ই ঠান্ডা ও জ্বরে পড়েন এমন ব্যক্তিদের জন্য রসুন হতে পারে এক মহৌষধ। শরীর থেকে জ্বর আর ঠান্ডা দূর করতে প্রতিদিন দু-তিন কোয়া রসুন কাঁচা খেতে হবে।

-ক্যানসার প্রতিরোধে রসুনঃ কোলন/প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধ করে থাকে এই রসুন। গলব্লাডার ক্যানসার হওয়া থেকেও মুক্ত রাখে। মেয়েদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এমনকি রেক্টাল ক্যানসারের হাত থেকে রক্ষা করে। এই রসুন ইস্ট ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া নিয়মিত রসুন সেবনে শরীরে সব ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

-যক্ষ্মা প্রতিরোধকঃ রসুন যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে সহায়তা করে।

-শ্বসন : রসুন যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন, হাপানি, হুপিং কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। রসুন এ সকল রোগ আরোগ্যের মাধ্যমে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

-রিউমেটিক (বাতজনিত) রোগ সমুহের উপর কাজ করেঃ রসুন গিট বাতের রোগে অনেক উপকার করে থাকে। নিয়মিত ৩ কোয়া করে রসুন খেলে গিটের বাত সেরে যেতে পারে।

-স্কার্ভি রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিশোধকঃ ভিটামিন সি থাকে যা স্কার্ভি রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে এবং ইহা রক্তনালী নমনীয় করে রক্ত চলাচল সহজ করে।

-অ্যান্টিবায়োটিক এর মতো কাজ করে (প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক): গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মতো কাজ করে। সকালে নাস্তার পূর্বে রসুন খেলে এটি আরও কার্যকরীভাবে কাজ করে। তখন রসুন খাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো উন্মুক্ত হয় এবং রসুনের ক্ষমতার কাছে তারা নতিস্বীকার করে। তখন শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসমূহ আর রক্ষা পায় না। রসুনে ‘এ্যালিসিন’ নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যার এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ভাইরাল, এন্টি ফ্যাঙ্গাল কার্যকারিতা আছে এবং যা ক্ষত, যক্ষা, আমাশয়, টাইফয়েড, কলেরা ও পাকস্থলির রোগজীবানু ধ্বংস করে।

-অন্ত্রের জন্য ভালঃ হজমে সাহায্য করে। খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করে। এছাড়াও এর ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় যেমন-ডায়রিয়া। এটা হজম ও ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এটি স্ট্রেস দূর করতেও সক্ষম। স্ট্রেস বা চাপের কারনে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায় পরতে হয়। তাই, খালি পেটে রসুন খেলে এটি আমাদের স্নায়বিক চাপ কমিয়ে এ সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

-রসুনে এন্টিক্সিডেন্ট থাকেঃ বিপাকীয় ক্রিয়া ও পরিবেশ দূষণের ফলে যে ফ্রি রেডিক্যালস তৈরি হয় তা হার্ট তথা সমস্ত শরীরের জন্য ক্ষতিকর৷ রসুনের  অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সেই ক্ষতি খুব ভাল ভাবে ঠেকাতে পারে৷ রসুনের এন্টিক্সিডেন্ট প্রষ্টেট গ্রন্থি, মলাশয়, মলদ্বার, কন্ঠনালী, ত্বকের টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এন্টিক্সিডেন্ট অকাল বার্ধক্য রোধ করে।

-স্মরণ শক্তি প্রবল করেঃ নিয়মিত ২-৩ কোয়া রসুন খেলে স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি
পায়।

-যৌন উদ্দীপনা ও যৌন শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসাবে কাজ করেঃ রসুন শুক্র ও শক্তিবর্দ্ধক হিসাবে কাজ করে। সুস্থ বীর্য তৈরিতে রসুনের জুড়ি মেলা ভার। যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে রসুন খুব ভালো ফল দিয়ে থাকে৷ যৌন ইচ্ছা ফিরে আনার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুবই কার্যকরী৷ প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক কোষ কাঁচা রসুন খেলে স্ত্রী-পুরুষ উভয়েরই যৌবন দীর্ঘস্থায়ি হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য

-আরো বশেী উপকার পাওয়ার জন্য রসুন খাওয়ার সাথে সাথে কাঁচা পয়িাজ, আদা, তেঁতুল, মধু, মেথি, লং, কালোজরিা ইত্যাদিও নিয়মতি প্রতদিন খেতে হবে এবং অবশ্যই কমপক্ষে প্রতদিনি ৪৫ মনিটি দ্রুত হাটতে হবে।

-অতিরিক্ত রসুন খেলে রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না যা সার্জারির জন্য বিপদজনক, গর্ভাবস্থায় ও দুগ্ধদানকারী মাতা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কাঁচা রসুন খাবেন না।


Wednesday, April 7, 2021

ছাগলের খামার

 


ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে তালমিলিয়ে দেশে পোলট্রি এবং মৎস্য উৎপাদন দ্রুত বাড়লেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে প্রাণিসম্পদ বিশেষ করে ছাগলের উৎপাদন  তেমনটা আশানুরূপ বাড়েনি। এদেশে প্রাপ্ত প্রায় ২০ মিলিয়ন ছাগলের প্রায় ৯৩ শতাংশ পালন করে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ধরনের খামারিরা। অথচ গবাদি প্রাণিকুলের মধ্যে ছাগল পালন যতটা লাভজনক ও সহজ অন্যগুলো তেমন নয়। ছাগলের যেসব জাত আছে যেমন অ্যাংগোরা, বারবারি, বিটাল, যমুনাপারি, সুরতি, মারওয়ারি, মালবারি, গাড্ডি, কাশ্মিরী, পশমিনা, সানেন, টুগেনবার্গ, অরপাইন, মোহসানা, ফিজি, অ্যাংলোলু। এসবের মধ্যে বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল বিশ্বমানের বিশ্ব সেরা। এসব ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। তাছাড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা অধিক এবং তারা দেশীয় জলবায়ুতে বিশেষভাবে উৎপাদন উপযোগী। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রধানত গোশত ও চামড়া উৎপাদনকারী জাত হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃত। এজন্য আমরা খুব গর্ব করে বলতে পারি ব্ল্যাক বেঙ্গল আমাদের ছাগলের জাত। এদের গড় ওজন ১৫-২০ কেজি। কখনও কখনও ৩০-৩২ কেজি পর্যন্ত হয়।  দৈনিক ওজন বৃদ্ধির হার দৈনিক ২০-৪০ গ্রাম। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ছাগল পালনের মাধ্যমে একজন ভূমিহীন বা প্রান্তিক খামারি বাড়তি আয় করতে পারেন। এমনও প্রমাণ আছে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন করে অনেক আশাতীত সফলতা পেয়েছেন। সুতরাং ক্ষুদে মাঝারি কিংবা বড় খামারিদের জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন একটি নিশ্চিত লাভজনক কার্যক্রম।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের পশ্চিম বাংলা, আসাম ও অন্যান্য রাজ্যে পাওয়া যায়। আকারে ছোট ও বড় দুই রকমের হয়। এজন্য বয়স্ক পুরুষ ও স্ত্রী ছাগলের ওজনের তারতম্য দেখা যায়। এদের ঘাড় এবং পেছনের অংশ উচ্চতায় প্রায় সমান থাকে। বুক প্রশস্ত। পাগুলো ছোট ছোট। ছাগ এবং ছাগীর শিং আছে। শিং ছোট বা মাঝারি আকারের হতে পারে। লম্বায় ৫-১০ সেন্টিমিটার হয়। শিং ওপরের দিক থেকে পেছনে বাঁকানো থাকে। কানের আকার ছোট ও মাঝারি কিছুটা ওপরের দিকে থাকে। দেহের গড়ন আঁটসাঁট। গায়ের রঙ সাধারণত কালো। তবে ধূসর সাদা বা বাদামি রঙেরও হতে পারে। গায়ের লোম ছোট ও মসৃণ। বছরে দুইবার এবং এক সাথে একাধিক বাচ্চা উৎপাদন করে। তবে দুধ উৎপাদন ক্ষমতা তুলনামূলক কম। স্ত্রী ছাগল ৯-১০ মাস বয়স হলেই প্রজননের যোগ্য হয় এবং ১৪-১৫ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। বলা যায়,  গোশতের জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল সর্বোৎকৃষ্ট। তবে দুধের জন্য যমুনাপারি, বারবারি ভালো। আর পশমের জন্য গাড্ডি ও অ্যাংগোরা ভালো।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে সুবিধাদি-
০ পারিবারিক আয় বাড়ে;
০ আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়, পরিবারের গোশত ও দুধের চাহিদা মেটে;
০ পারিবারিক আমিষের চাহিদা পূরণ হয়;
০ চামড়া রফতানির মাধ্যমে অধিকতর আয় বাড়ে;
০ ছাগলের দুধ খুবই পুষ্টিকর এবং এলার্জি উপসর্গ উপশমকারী;
০ ব্ল্যাক বেঙ্গলের গোশত সুস্বাদু ও চামড়া আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত;
০ অধিক বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং দেশীয় জলবায়ুতে বিশেষভাবে উৎপাদন উপযোগী;
০ ছাগল পালনে অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়, পারিবারিক যে কোনো সদস্য দেখাশোনা করতে পারেন;
০ শয়ন ঘরে বা রান্না ঘরে কিংবা শয়ন ঘরের পাশে সাধারণ মানের কম খরচি ঘরে রাখা যায়;
০ দ্রুত বংশ বৃদ্ধি ঘটে বলে অল্প সময়ে সুফল পাওয়া যায়;
০ সব ধর্মালম্বী লোকদের জন্য ছাগলের গোশত সমাদৃত;
০ ছাগল পালনে অন্যান্য পশুর মতো আলাদ বিশেষ গোচারণভূমির প্রয়োজন হয় না;
০ ক্ষেতের আইলের, রাস্তার ধারে, বাড়ির আশপাশের অনাবাদি জায়গার ঘাস লতাপাতা খেয়ে জীবনধারণ করতে পারে;
০ বাড়ির আঙিনার আশপাশের গাছগাছড়ার লতাপাতা ছাগলের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়;
০ অল্প পুঁজিতে লালন পালন করা যায়;
০ গবাদিপশুর মতো উন্নতমানের খাদ্য আবাসন বা অন্যান্য বিশেষ যতেœর প্রয়োজন হয় না।
প্রযুক্তির বিশেষ বৈশিষ্ট্য : সাধারণ পদ্ধতি প্রযুক্তির বাইরে আরও কিছু বিশেষ প্রযুক্তি পদ্ধতি আছে, যা অনুসরণ করলে ছাগল পালন আরও বেশি লাভজনক হয়। নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুযায়ী ছাগল পালন করলে ছাগলের দৈনিক গড় ওজন বাড়ে, গর্ভধারণের জন্য কমসংখ্যক পালের প্রয়োজন হয় ও অল্প সময়ে অধিক বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া বয়স্ক ছাগী ও বাচ্চার মৃত্যুর হারও কমে যায়। মোটকথা আসল লাভ বেশি হয়।
খাদ্য ও খাওয়ানো পদ্ধতি : ফলপ্রসূ উৎপাদনের জন্য সঠিক পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি। কাক্সিক্ষত লাভ পাওয়ার জন্য  ছাগলকে দুই ধরনের খাদ্য সরবরাহ করা উচিত; যেমন- আঁশযুক্ত বা আঁশজাতীয় খাদ্য ও দানাদার খাদ্য।
ক. আঁশযুক্ত খাদ্য : গ্রামাঞ্চলে সাধারণত মুক্ত চারণ পদ্ধতির মাধ্যমে ছাগল পালন করা হয়। কাজেই আঁশজাতীয় খাবার সরবরাহের প্রয়োজন হয় না। কারণ, চড়ে খাওয়ার সময় ছাগল দিনভর তার নিজের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী আঁশজাতীয় রকমারি খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। তবে মুক্তচারণ পদ্ধতি সব সময় কাজে লাগানো যায় না। এজন্য বিশেষ সময় পরিকল্পিতভাবে খামারিদের আঁশযুক্ত খাবার অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে।
শস্য মৌসুমে যখন ক্ষেতে ফসল থাকে তখন মুক্ত চারণের ফলে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ থেকে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়। কাজেই, এ সময় ছাগলকে মাঠে বা রাস্তার ধারে বেঁধে চড়ানো উচিত। তবে বেঁধে চরালে ছাগল প্রয়োজন অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাবার পায় না। তাই এ সময় ছাগলকে পরিকল্পিত মাত্রা অনুযায়ী আঁশযুক্ত খাবার সরবরাহ করতে হবে।
বর্ষা মৌসুমে ছাগলকে পুরোপুরি আবদ্ধ অবস্থায় পালন করতে হয়। এ সময়ে অবশ্যই আঁশযুক্ত খাবার হিসেবে বিভিন্ন গাছের পাতা ও সবুজ ঘাস দেয়া যেতে পারে। শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ যে সময়ে ক্ষেতে  ফসল থাকে সে সময়ে ৫০ ভাগ গাছের পাতার সাথে ৫০ ভাগ সবুজ ঘাস সরবরাহ করলে ভালো উৎপাদন পাওয়া যাবে। ক্ষুদ্র খামারিরা বাড়ির আঙিনা, জমির আইল ও রাস্তার পাশে নেপিয়ার, আলফালফা, শিম, ইপিল ইপিল, কাঁঠালপাতা এসবের চারা রোপণ করতে পারেন। এ থেকে সারা বছর আঁশযুক্ত খাবার সংগ্রহ করা সহজ হবে।
খ. দানাদার খাদ্য : শুধু আঁশযুক্ত খাবার ছাগলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের চাহিদা মেটাতে পারে না। আশানুরূপ উৎপাদন পেতে হলে আঁশযুক্ত খাবারের সাথে দানাদার খাবার অবশ্যই সরবরাহ করা প্রয়োজন। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট হারে দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ ব্যবহার করলে ছাগল থেকে ভালো উৎপাদন-ফলাফল পাওয়া সম্ভব। খাবার যাই-ই প্রয়োজন হোক না কেন যে কোনো দানাদার খাদ্যের মিশ্রণে শতকরা হারে হবে চাল-ভুট্টা-গমের ভুষি ৪৫ ভাগ, চালের কুঁড়া ২০ ভাগ, খেসারি ভাঙা ১৮ ভাগ,  তিলের খৈল ১৬ ভাগ, লবণ ০.৯ ভাগ, এমবাভিট ০.১ ভাগসহ যেন মোট ১০০ ভাগ হয়। লক্ষ রাখতে হবে যাতে এ খাবারের মিশ্রণে শতকরা ১৬ ভাগ অপরিশোধিত আমিষ থাকে। তা না হলে সেটাকে সুষম খাবার বলা যাবে না। দানাদার খাদ্যের মধ্যে চালের ক্ষুদ-কুঁড়া, গম ও ভুট্টা চূর্ণ, গমের ভুষি, ছোলা-খেসারি ভাঙা, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, ভিটামিন, শুঁটকির গুঁড়া ও খনিজ লবণ, আয়োডিনযুক্ত লবণ এগুলো মাত্রা ও অনুপাত অনুযায়ী খাওয়ালে লাভ বেশি হবে।
খাওয়ানো পদ্ধতি : পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার সুবিধামতো সময়ে দিনে দুই বা ততোধিক বারে সরবরাহ করলেই চলবে। আর দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতি ছাগীকে প্রতিদিন ১৬০ গ্রাম অর্ধেক করে সকালে ৮০ গ্রাম  এবং বিকালে ৮০ গ্রাম খাওয়াতে হবে এবং তিন মাস বয়স পর্যন্ত প্রতিটি ছাগলের বাচ্চাকে প্রতিদিন ১০০ গ্রাম (৫০ গ্রাম সকালে ও ৫০ গ্রাম বিকালে) সরবরাহ করতে হবে।
 ছাগল থেকে কাক্সিক্ষত উৎপাদন পেতে হলে খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। সব সময় বয়স অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ দিতে হবে। ছাগলের খাদ্য তালিকায় স্টাটার খাদ্য, বাড়ন্ত খাদ্য এবং প্রাপ্ত বয়স্ক ছাগলের খাদ্য এ তিন ধরনের খাদ্য মাত্রা নিশ্চিত করতে হবে বয়স অনুযায়ী। ১ দিন থেকে ৩ মাস, ৩ মাস থেকে ১ বছর এবং ১ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য তিন ধরনের খাদ্য সরবরাহ দিতে হবে।
পানি : পানির অপর নাম জীবন। আরও ভালোভাবে বলা দরকার বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। পানি সব প্রাণীর মতো ছাগলের জন্যও পরিমিত পরিমাণে সরবরাহ থাকা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন বিশুদ্ধ হয়। সে জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ছাগল পালন ঘরের খুব কাছেই যেন বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাসস্থান : পারিবারিক পর্যায়ে ছাগল পালন ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে পারলে কম সময়ে যেমন ছাগল পালন সহজ হয় তেমনি উৎপাদনও বেশি পাওয়া যায়। একসাথে অনেক ছাগল পালন করলে বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনায় বাসস্থান তৈরি খুব জরুরি। গ্রামাঞ্চলে মুক্তচারণ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয়। এজন্য দিনে বাসস্থানের তেমন কোনো চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। শুধু রাতে নিরাপদে বাসস্থানে রাখার প্রয়োজন হয়। এজন্য সম্পূর্ণ আলাদা স্থানে অথবা শোয়ার ঘরের একপাশে বা বারান্দায়ও রাখার ব্যবস্থা করা যায়। ছাগলের ঘরের চাল হিসেবে টিন, টাইল, ছন, গোলপাতা, খড় বা গাছের পাতা ব্যবহার করা যায়। আলাদা ঘর নির্মাণের সময় অবশ্যই উঁচু স্থান যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস পাওয়া যায় এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। স্যাঁতসেঁতে ভিজা জায়গায় ছাগল থাকতে চায় না। তাছাড়া এসব জায়গায় পরজীবী ও জীবাণু আক্রমণ করে। সেজন্য শুকনা জায়গার প্রয়োজন হয়। ছাগলের বাসস্থান দুই রকমের হয়। ভূমি সমতল ঘর এবং খুঁটির ওপর ঘর। তবে ছাগলের ঘরে মাচা আবশ্যকীয়। মাচার উচ্চতা ৪-৫ ফুট এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৬-৮ ফুট হওয়া দরকার। মাচার বাঁশ বা কাঠের মধ্যে ফাঁকা রাখতে হবে। এতে ছাগলের পায়খানা প্রস্রাব সহজেই নিচে পড়ে যাবে মাচা জীবাণুমুক্ত থাকবে। প্রতিদিন সকাল বেলা ছাগলের বাসস্থান পরিষ্কার করতে হবে। বাসস্থানটি যাতে ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ছাগলের প্রধান শত্রু ঠাণ্ডা । এজন্য শীতকালে বেশি ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করার জন্য ছাগলের ঘরে প্রয়োজন অনুযায়ী চট পলিথিন দিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে। শীতকালে বাচ্চাকে রাতে মায়ের সাথে ব্রুডিং প্যানে রাখতে হবে।
ছাগলের বাচ্চার যত্ন : শুকনা জায়গায় ছাগলের বাচ্চা প্রসবের ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চা প্রসবের পর বাচ্চার পুরো শরীর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নাভির নিচের নাড়ি কেটে দিতে হবে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চাকে শাল দুধ অর্থাৎ মায়ের ওলান থেকে নিঃসৃত প্রথম দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ এতে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। জন্মের পর বাচ্চার নাভি টিংচার আয়োডিন দিয়ে মুছে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মায়ের দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণ না হলে কৃত্রিমভাবে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথম সপ্তাহ বাচ্চাকে ৫ ঘণ্টা পরপর খাওয়াতে হবে। পরবর্তী সপ্তাহে দিনে ৪ বার খাওয়ালেই চলবে। উল্লেখ্য যে, কৃত্রিমভাবে দুধ খাওয়াতে হলে বোতল ও নিপল অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। জন্মের ২-৩ সপ্তাহ পর হতেই দানাদার ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। মোটকথা বয়স্ক ছাগলের চেয়ে বাচ্চা ছাগলের প্রতি একটু বেশি নজর দিতে হবে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
ছাগলের রোগ : ছাগল নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যেসব রোগ দেখা যায় তার মধ্যে আছে সংক্রামক রোগ, পরজীবীজনিত রোগ, অসংক্রামক রোগ, অপুষ্টিজনিত রোগ, বিপাকীয় রোগ। এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক রোগ হলো পিপিআর, গোট পক্স, একথাইমা, নিউমোনিয়া, ক্রিমি এসব। তাছাড়া আছে তাড়কা ওলান প্রদাহ, ধনুস্টংকার, গর্ভপাত, ক্ষুরা রোগ, জলাতংক, মাইকোপ্লাজমোডিসিস, পায়ের ক্ষত রোগ, পেটের পীড়া, সালমোনেলাসিস এসব। ছাগলকে রোগমুক্ত রাখতে না পারলে ছাগল পালন করে লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাই রোগবালাই থেকেমুক্ত রাখার প্রধান উপায়। ছাগলকে রোগমুক্ত রাখতে হলে যেসব বিষয়গুলোর প্রতি অবশ্যই যতœবান হতে হবে সেগুলো হলো-
ছাগলের ঘর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। ঘর যাতে ভেজা স্যাঁতসেঁতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে;
ছাগলের খাবার ও পানিতে যাতে রোগজীবাণু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে;
নতুন ছাগল কেনার পর অন্তত ৭ দিন আলাদা করে রাখতে হবে। যেসব রোগের টিকা পাওয়া যায় সেসব টিকা দিতে হবে;
কোনো রোগের লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র রোগাক্রান্ত ছাগলকে আলাদা করে রাখতে হবে। রোগাক্রান্ত ছাগলকে দ্রুত কাছের পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং চিকিৎসা প্রদান করতে হবে;
রোগের কারণে মৃত ছাগলগুলোকে মাটিতে পুঁতে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে;
নিয়মিত ও পরিমিত ছাগলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে;
মনে রাখতে হবে চিকিৎসার চেয়ে নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অধিক গ্রহণযোগ্য। তাই নিয়মিত টিকা দিতে হবে।
কৃমি দমন : কৃমি ছাগলের মারাত্মক সমস্যা। বয়স্ক ছাগল ও বাচ্চার কৃমি দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ও উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না। কৃমির জন্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কাজেই কাছের প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে ছাগলের মল পরীক্ষা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছাগলকে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গবেষণা করে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ২, ৩ বা ৪টি ছাগল পালন করলে বছরে গড়ে যথাক্রমে ৩১৫০, ৪১৫০ বা ৫৩৭৩ টাকা আয় করা যায়। আমাদের দেশের দরিদ্র খামারি ও দুস্থ মহিলারা এ নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে ছাগল পালন করলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি রয়েছে নিজের অবস্থার উন্নয়নের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। কম সময়ে দ্রুত আয়ের জন্য ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন পারিবারিকভাবে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে। অল্প কিংবা বেশি ছাগলের খামার প্রতিষ্ঠা করে বহুমুখী আয়ের পথ সুগম করা যায়। এখানে পুঁজিও তুলনামূলকভাবে কম লাগে। আর পারিবারিকভাবে সবাই অংশগ্রহণ করে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন করতে পারে। প্রান্তিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি কৃষকের জন্য এটি একটি দারুণ লাভজনক আয়ের পথ-কৌশল হতে পারে। এ ব্যাপারে যে কোনো সুপরামর্শের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত ও পরিমিত যোগাযোগ নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।

গরুর খামারের বিবেচ্য বিষয়সমূহ


বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ এবং বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের  সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে কৃষি। বাংলাদেশের জনগণের একটা বিশাল অংশ তাঁদের জীবনধারণের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। একটা সময় কৃষি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো তবে আজকের চিত্র একেবারেই উল্টো; শিক্ষিত যুবক, নানা পেশা থেকে আগত নতুন উদ্দ্যেক্তাদের বড় বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং কৃষিবিদদের পরামর্শে আমাদের কৃষি হয়ে উঠেছে আধুনিক কৃষি। বিশ্বের ১ম খাদ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিতে গেলে প্রান্তিক পর্যায় থেকে বড় উদ্যোক্তাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।এক্ষেত্রে ছোট বড় সকল খামারি, কৃষক, মৎস্যচাষী, ফলচাষীদের আমাদের তথ্যবহুল ভিডিও চিত্রের দ্বারা তাঁদের সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে কৃষিকার্যক্রম যাতে সহজ হয় সেটি আমাদের উদ্দেশ্য। কৃষক থেকে খামারি,মৎস্যচাষী থেকে ফলচাষী তাঁদের সুবিধা অসুবিধা গুলো তুলে ধরবার মাধ্যম একমাত্র মিডিয়া এবং সরকারি বেসরকারি ডিজিটাল প্লাটফর্ম। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমাদের কোর্সটি কিছুটা হলেও অবদান রাখবে এবং সবচেয়ে বড়কথা কৃষকরা চান নানাবিধ নিত্যনতুন প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য।

 প্রধান বিবেচ্য বিষয়সমূহ:

১.  ভালো দুগ্ধবতী গাভী চেনার উপায়
২. দুগ্ধবতী গাভীর খাদ্য ও পুষ্টি
৩. গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা
৪. গর্ভবতী গাভীর আরাম ব্যবস্থাপনা
৫. শেড ডিজাইন
৬. বাছুরের যত্ন
৭. ঘাস চাষ
৮. মেসটাইটিস
৯. শাল দুধ পরীক্ষা
১০. টি এইচ আই ভ্যালু
১১. ক্ষুরা রোগ.
১২. বকনাকে বীজ প্রদানের আদর্শ সময়

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

 হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের দিনাজপুরে বাঁশেরহাট নামক স্থানে অবস্থিত একটি সরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের ২য় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটি উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে শীর্ষস্থানীয়। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন এই বিদ্যাপীঠে।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাবিপ্রবি-লোগো.png
ধরনসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত১৯৭৯ ( বিশ্ববিদ্যালয় চালু ১১সেপ্টেম্বর ১৯৯৯)
আচার্যরাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ
উপাচার্যপ্রফেসর ড.বিধান চন্দ্র হালদার(রুটিন দায়িত্ব)
ডিন৯ জন
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
২৯৩ জন
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ
৫৫০ জন
শিক্ষার্থী১১০০০
অবস্থান
শিক্ষাঙ্গন৮৫ একর(হাবিপ্রবি এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে), শহর হতে ০৯ কিলোমিটার উত্তরে এবং ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পশ্চিমে
সংক্ষিপ্ত নামহাবিপ্রবি (HSTU)
অধিভুক্তিবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
ওয়েবসাইটwww.hstu.ac.bd

ইতিহাস

Hstu-sohidminar.JPG

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (AETI) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। এটিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প” গ্রহণ করা হয়। ৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড: মো: মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। এটি উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর বিভাগের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। কোর্স-ক্রেডিট-সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত । বর্তমানে ৯ টি অনুষদের অধীনে ২৩ টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়, এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ৮ টি অনুষদে ২২ টি বিষয় এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে একটি অনুষদে ২৮ টি বিষয় রয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন ৮৫ একর।

ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ

ক্যাম্পাস এর পাশেই ঢাকা -দিনাজপুর মহাসড়ক অবস্থিত ৷ দিনাজপুর শহর হতে ক্যাম্পাস এর দূরত্ব মাত্র ১০ কি.মি.। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সবুজ গাছপালার সমারোহ। আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন, আছে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার, জিমন্যাশিয়াম, টিএসসি, ক্যান্টিন আছে।

অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল(একটি বিদেশী শিক্ষার্থীদের), ৩টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসন বিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম। এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব,২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন,১টি শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বাক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন,বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। আছে একটি ভি. আই. পি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও এ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির আকর্ষণীয় সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার।

একাডেমিক কার্যক্রম

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। প্রতি সেমিস্টার সমাপ্ত হয় ২১ সপ্তাহে। যেখানে ইংরেজি মাধ্যমে ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি বাস্তব জ্ঞান অর্জনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষা সফর। মেধাবীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন পদক ও বৃত্তির ব্যবস্থা। একাডেমিক কার্যক্রম বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।

অনুষদ ও ডিসিপ্লিন সমূহ

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধীন ২৩টি স্নাতক ডিগ্রী এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অনুষদের অধীন ৩২টি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করে।

স্নাতকোত্তর ডিসিপ্লিন সমূহ

  • কৃষি অর্থনীতি
  • উদ্যানবিদ্যা
  • মৃত্তিকাবিজ্ঞান
  • পতঙ্গবিজ্ঞান
  • উদ্ভিদ রোগবিদ্যা
  • জিনতত্ত্ব এবং উদ্ভিদ প্রজনন
  • ফসল শারীরবিদ্যা এবং বাস্তুবিদ্যা
  • কৃষি সম্প্রসারণ
  • কৃষি রসায়ন
  • কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ
  • পরিসংখ্যান
  • জৈব রসায়ন এবং জৈবাণুবিজ্ঞান
  • মৎস্য জীববিজ্ঞান ও জিনতত্ত্ব
  • মৎস্য ব্যবস্থাপনা
  • খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ
  • খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
  • খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টি
  • জৈবাণুবিজ্ঞান
  • রোগবিদ্যা ও পরজীববিদ্যা
  • ডেইরি ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান
  • অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা ও জীবদেহের তন্তুবিন্যাসবিদ্যা
  • সাধারণ প্রাণী বিজ্ঞান ও পুষ্টি
  • জিনতত্ত্ব এবং পশু প্রজনন
  • চিকিৎসা, শল্য এবং ধাত্রীবিদ্যা
  • শারীরবিদ্যা ও ঔষধসংক্রান্ত বিজ্ঞান
  • ব্যাবস্থাপনা
  • অর্থশাস্ত্র
  • অর্থনীতি
  • বিপণন
  • হিসাবরক্ষণ
  • ফার্ম পাওয়ার এন্ড মেশিনারিজ
  • ইরিগেশন এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট
  • ইংরেজি
  • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল
  • ইলেকট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল

স্নাতক ডিসিপ্লিন সমূহ

প্রকৌশল অনুষদ

  • খাদ্য এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকৌশল
  • কৃষি প্রকৌশল
  • স্থাপত্যবিদ্যা
  • পুরকৌশল
  • যন্ত্রকৌশল

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ

  • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল
  • ইলেক্ট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল
  • তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ

  • মার্কেটিং
  • একাউন্টিং
  • ম্যানেজমেন্ট
  • ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং

কৃষি অনুষদ

  • এগ্রিকালচার

মৎস্য অনুষদ

  • ফিসারিজ

ভেটেরিনারি এবং প্রাণী অনুষদ

  • ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন

বিজ্ঞান অনুষদ

  • পদার্থবিদ্যা
  • রসায়ন
  • গণিত
  • পরিসংখ্যান

সামাজিকবিজ্ঞান ও কলা অনুষদ

  • ইংরেজি
  • অর্থনীতি
  • সমাজবিজ্ঞান
  • ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ

আবাসন

বর্তমানে ছেলেদের জন্য হল রয়েছে-

(১)শেখ রাসেল হল (২)শেখ রাসেল (সম্প্রসারিত) হল (৩)শহীদ জিয়াউর রহমান হল(ডি-২) (৪)তাজউদ্দীন আহমেদ হল (৫)বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল

মেয়েদের জন্য হল রয়েছে- (১)শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব হল (২)কবি সুফিয়া কামাল হল (৩)আইভি রহমান হল।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে- (১) ইন্টারন্যাশনাল হল (ডি-২)

কানের গঠন ও কাজ

চিত্র : কান বা কর্ণ গঠন: কান বা কর্ণকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।  মানুষের কানের প্রধান তিনটি অংশ হল- (১) বহি:কর্ণ বা কান (২) মধ্যকর্ণ এ...